শিলিগুড়ি , ১৮ ডিসেম্বর : শিলিগুড়ি পুরনিগমের রেকর্ড রুম সিল করে সিআইডি তদন্তের নির্দেশ কলকাতা হাইকোর্টের জলপাইগুড়ি সার্কিট বেঞ্চের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের । শুধু তাই নয় । পুর কমিশনার সোনম ওয়াংদি ভুটিয়াকে ভরা এজলাসে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের তীব্র ক্ষোভের মুখে পড়তে হয়েছে । ঘটনায় একদিকে যেমন চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে , অন্যদিকে সরগরম রাজনৈতিকমহল । যদিও ওই ঘটনা নিয়ে মুখ খুলতে নারাজ পুর কর্তৃপক্ষ। শনিবারই রেকর্ড রুম সিল করার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি ।
শিলিগুড়ির বর্ধমান রোডের একটি বেসরকারি ভবনের ট্রাস্টের প্রাক্তণ সভাপতি অবৈধভাবে সেই ভবনটি নির্মাণ করেছে । পাশাপাশি ফায়ার লাইসেন্স পেতে যে নিয়ম মেনে ভবন তৈরি করা হয় তা মানা হয়নি । এইসব অভি্যোগ তুলে বর্তমান ট্রাস্টের সদস্যরা প্রাক্তণ ট্রাস্টের সভাপতি ও সদস্যদের বিরুদ্ধে সার্কিট বেঞ্চে মামলা দায়ের করে। ১১ ডিসেম্বর বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে মামলার শুনানি শুরু হয় । শুনানির সময় বর্তমান ট্রাস্টের সদস্যরা জানায় ২০১৪ সালে দায়িত্ব নেওয়ার পর ভবনের ব্লুপ্রিন্ট ছাড়া আর কোন নথি নেই ।
এরপরই সত্যতা যাচাইয়ের জন্য আদালত শিলিগুড়ি পুরনিগমকে ওই ভবনের প্ল্যান সংক্রান্ত নথি জমা দেওয়ার নির্দেশ দেয় । কিন্তু ১২ ডিসেম্বর পুর কর্তৃপক্ষ কোন প্ল্যান জমা দিতে পারেনি। বিচারক ফের পুর কমিশনার সোনম ওয়াংদি ভুটিয়াকে ১৩ ডিসেম্বর প্ল্যান নিয়ে হাজির হতে নির্দেশ দেন। কিন্তু পুর কমিশনার প্ল্যান ছাড়াই বিচারকের সামনে হাজির হন। ১৪ ডিসেম্বর ফের সুযোগ দেওয়া হয় পুর কমিশনারকে। পুর কমিশনার জানান , ভবনটি ১০ বছরের পুরনো। যা রেকর্ড রুমে রাখা আছে। সেটার খোঁজ চলছে । এরপর বিচারক ১৫ ডিসেম্বর কমিশনারকে হোল্ডিং ট্যাক্স আদায়ের পুরনো ও নতুন রশিদ আনার নির্দেশ দেন৷ কিন্তু সেদিন পুর কমিশনার রশিদ ছাড়াই শুধুমাত্র ট্যাক্সের হলফনামা নিয়ে হাজির হন। এরপরেই চটে যান বিচারপতি।
বারবার সুযোগ দেওয়ার পরেও কেন প্ল্যান ও রশিদ আনতে ব্যর্থ হচ্ছে পুর কর্তৃপক্ষ বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন । পাশাপাশি নির্দেশ দেন সিআইডিকে অবিলম্বে রেকর্ড রুম সিল করতে হবে। পাশাপাশি সিআইডির সুপারকে নির্দেশ দেন দু’সপ্তাহের মধ্যে প্ল্যানটির তদন্ত করে রিপোর্ট জমা দিতে । পাশাপাশি নথি গায়েব হওয়ার প্রসঙ্গ টেনে বিচারপতি আরও নির্দেশ দেন ১৯৮৯ সালের পরে কতগুলি বিল্ডিং প্ল্যান পুরনিগম পাস করেছে আর কটির নথি রেকর্ড রুমে রয়েছে সেই তথ্যও জানাতে ৷ বিচারপতির এই নির্দেশের পরই আতঙ্ক ছড়ায় পুরভবনে।
ওই মামলা নিয়ে সরকারি আইনজীবী জয়জিৎ চৌধুরীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি কিছু জানাতে নারাজ। পাশাপাশি কমিশনার সোনম ওয়াংদি ভুটিয়ার সঙ্গে বারবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি এড়িয়ে যান।